কাঁঠাল খাওয়ার উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ

প্রচুর পরিমাণে খনিজ ও পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ একটি ফল হল কাঁঠাল। যার কারণে বাংলাদেশের জাতীয় ফল হিসেবে কাঁঠাল কে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

হলুদ বর্ণের এই ফল আমাদের শরীরে যে উপকার গুলো করে থাকে আজকে সে বিষয়গুলো নিয়ে আপনাদের সাথে আলোচনা করতে যাচ্ছি। তার আগে বলে রাখি কাঁঠাল কিন্তু একটি মৌসুমী জাতীয় ফল। সারাবছর কাঁঠালের চাহিদা মেটাতে পারি না।

কাঁঠালের পুষ্টিগুণঃ

সর্ব গুণে গুণান্বিত একটি ফল হলো কাঁঠাল। কারণ কাঁঠাল এমন একটি ফল যা কাঁচা অবস্থায় সবজি হিসেবে এবং পাকা অবস্থায় আমরা ফ্রুটস হিসাবে খেতে পারি। পাশাপাশি কাঁঠালের বিচি আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকার করে থাকে। কাঁঠালের মধ্যে যে যে পুষ্টিগুণ গুলো রয়েছে তা নিম্নে দেওয়া হল……………

কাঁঠালের মধ্যে রয়েছে…

৯৫% ক্যালরি,

০.৫ গ্রাম চর্বি,

২ মিলিগ্রাম সোডিয়াম,

৪৪৮ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম,

২৩ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট

১.৭ গ্রাম প্রোটিন,

২% ভিটামিন ও খনিজ,

০.১৫ ক্যালসিয়াম,

২২% ভিটামিন-ডি, এছাড়াও আরো অনেক ধরনের পুষ্টি উপাদান কাঁঠালের মধ্যে রয়েছে।

শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কাঁঠালের উপকারিতাঃ

যেহেতু কাঁঠালের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান রয়েছে, এটি আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ব যথেষ্ট ভূমিকা রাখে। কাঁঠাল ভিটামিন সি এর প্রাকৃতিক উৎস হওয়ায় এটি আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস দমনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে থাকে। যেমন টিউমারের মতো সমস্যা সমাধানে কাঁঠালের গুরুত্ব অনেক বেশি।

শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালরির জন্য কাঁঠালের উপকারিতাঃ 

যারা খুব অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে যান অথবা যাদের শরীরে ক্যালরির পরিমাণ কমে যাচ্ছে দিনদিন, তারা কিন্তু আপনাদের এই ক্যালরির পরিমাণ বাড়াতে কাঁঠাল কে বেছে নিতে পারেন। কারণ কাঁঠালের মধ্যে থাকা বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন জাতীয় উপাদান আমাদের শরীরে দ্রুত এনার্জী ফেরাতে কাজ করে।

কোলেস্টেরল কমাতে কাঁঠালের উপকারিতাঃ 

যেহেতু কাঁঠালের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে শর্করা রয়েছে, তাই এটি আমাদের শরীরে ভালো কোলেস্টেরল বাড়াতে খুবই কার্যকরী ভূমিকা রাখে এবং কাঁঠালের আরো কিছু উপাদান আমাদের শরীরে খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে অনেক উপকার করে থাকে। কাঁঠাল ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য প্রাকৃতিক চিনির একটি ভালো উৎস হিসেবে কাজ করে থাকে। তাই মিষ্টি জাতীয় পিঠা পুলি তৈরি করতে চিনি ব্যবহার না করে কাঁঠালের রস ব্যবহার করে খেতে পারেন।

হার্টের সমস্যা সমাধানে কাঁঠাল যেভাবে উপকার করে থাকেঃ   

যখন আমাদের হার্টের রক্তনালী মধ্যে সোডিয়াম এর পরিমাণ বেড়ে যায় তখন আমাদের হার্টের সমস্যা দেখা যায়, এই সোডিয়ামকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য তখন শরীরের প্রয়োজন হয় পর্যাপ্ত পরিমান পটাশিয়াম এর।  আমাদের এই পটাশিয়ামের ঘাটতি পূরণ করতে সহযোগিতা করে থাকে  কাঁঠাল। তাই যাদের হার্টের সমস্যা আছে তারা কাঁঠাল প্রতিষেধক হিসেবে খেতে পারেন।

পাকস্থলির পরিপাক ক্রিয়া সচল রাখতে কাঁঠালের উপকারিতাঃ

যাদের পাকস্থলির পরিপাক ক্রিয়া সক্রিয় নয় বা যাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা অথবা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা রয়েছে, তাঁরা কিন্তু আঁশ জাতীয় খাবার হিসেবে প্রথম পছন্দের তালিকায় কাঁঠাল রাখতে পারেন। কারণ কাঁঠাল একটি আশজাতীয় ফল হওয়ার কারণে এটি আমাদের পাকস্থলী সংক্রান্ত সমস্যা নিরাময় যথেষ্ট পরিমাণে ভূমিকা রাখে।

দৃষ্টিশক্তি সমুন্নত রাখতে কাঁঠালের উপকারিতাঃ  

কাঁঠালের আরেকটি অন্যতম উপকারিতা হলো কাঁঠালের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ রয়েছে। যা আমাদের দৃষ্টিশক্তি সমুন্নত রাখতে কাজ করে থাকে। যাদের দৃষ্টিশক্তি ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে বা চোখে যাদের সমস্যা দেখা যায় তারা কিন্তু কাঁঠাল খেতে পারেন। কাঁঠালের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান রয়েছে যা আমাদের চোখকে বিভিন্ন ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া থেকে দূরে রাখতে সহায়তা করে।

কাঁঠাল একটি বিদেশি ফল এবং আমাদের দেশে সারা বছর পাওয়া যায় না। তাই কাঁঠালের উপকারিতার কথা চিন্তা করে আপনারা আপনাদের বিভিন্ন সমস্যার জন্য কাঁঠালকে শুধু ফল হিসাবে নয় প্রতিষেধক হিসেবে ও পাশে রাখতে পারেন।

 

Leave a Comment