কেন খাবেন কচু? জেনে নিন কচুর উপকারিতা

আসলেই কি কচুর উপকারিতার কথা বলে শেষ করা যাবে????

আমাদের দেশে কচু এমন একটা উদ্ভিদ, যেটা জলে স্থলে উভয় জায়গায় পাওয়া যায়। সহজলভ্য শাক বা সবজি হিসেবে কচুর চাহিদা এই উপমহাদেশে খুবই জনপ্রিয়। সহজলভ্য হওয়ায় বাজারে এর চাহিদাও অনেক বেশি। কচুর পাতা থেকে শুরু করে কচুর ডাটা, কচুর লতি, কচুর ছড়া প্রভৃতি উপাদান আমরা কচু থেকে পেয়ে থাকি।

আমাদের শরীরে কচুর উপকারিতা কতটুকু প্রভাব ফেলে তা আজকে আপনাদের সাথে আলোচনা করব।

কচুতে থাকা উপকারী উপাদান সমূহঃ

কচুর বিভিন্ন ধরনের প্রজাতি রয়েছে। এছাড়াও কচুতে আয়রন, ক্যালসিয়াম, ফাইবার, অক্সালিক এসিড, এন্টি অক্সিডেন্ট উপাদান, এন্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে কচুর লতির উপকারিতাঃ

যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বা পাইলসের সমস্যা রয়েছে তারা সবজি হিসেবে কচুর লতি খেতে পারেন। কচুর লতির মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে যা আমাদের খাবার হজম করতে ভালোভাবে কাজ করে। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকে আমরা দুরে থাকতে পারি।

রক্তশূন্যতা পূরণ করতে কচুর উপকারিতাঃ

যাদের রক্ত শূন্যতা রয়েছে বা থ্যালাসেমিয়া জাতীয় রোগ আছে তারা কচু শাক বা কচুর ডাটা সবজি হিসেবে খেতে পারেন কারণ কচুর মধ্যে থাকা প্রচুর পরিমাণে আয়রন আমাদের শরীরে রক্ত উৎপাদনের গতি বাড়িয়ে দেয় ফলে রক্ত শূন্যতা পূরণ হয়। পাশাপাশি কচুর ডাটার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে জলীয় দ্রবণ থাকায় এটি আমাদের শরীরে পানিশূন্যতা পূরণ করে থাকে।

দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে কচুর উপকারিতাঃ

কচুর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন রয়েছে। তার পাশাপাশি কচুশাকের মধ্যে ভিটামিন বি, ভিটামিন বি টুয়েলভ, ভিটামিন কে, ভিটামিন এ প্রভৃতি উপাদান রয়েছে। যা আমাদের রাতকানা সমস্যা সমাধানে কাজ করে। পাশাপাশি যাদের দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হয়ে আসতেছে, তারা নিয়মিত কচু খাওয়ার মাধ্যমে এ সমস্যা থেকে পরিত্রান পেতে পারেন।

হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে কচুর উপকারিতাঃ

কচুর মধ্যে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম প্রভৃতি উপাদান যা আমাদের হাটকে ভালো রাখতে যথেষ্ট পরিমাণে ভূমিকা রাখে। তাই যারা হার্টের রোগী আছে চিকিৎসকরা তাদেরকে বেশি পরিমাণে কচু জাতীয় শাকসবজি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রচুর উপকারিতাঃ

শরীরের মধ্যে শর্করার পরিমাণ বেড়ে গেলে, বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা যায়। কিন্তু কচুর মধ্যে থাকা এন্টি অক্সিডেন্ট উপাদান আমাদের রক্তে শর্করার পরিমাণ কমিয়ে দেয়। তাই যাদের রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে গেছে বা যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়েছেন, তারা নিয়মিত খাবারের তালিকায় কচুশাক, কচুর লতি অথবা কচু জাতীয় যেকোনো একটি সবজি রাখতে পারেন। এর ফলে আপনার রক্তে সুগারের মাত্রা বা শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।  

গর্ভবতী নারীদের কচু খাওয়ার উপকারিতাঃ

যে সকল নারীরা গর্ভবতী হয়েছেন, তাদের প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও আয়রন এর প্রয়োজনীয়তা দেখা যায়। কিন্তু অনেক সময় অনেক দরিদ্র মহিলারা আর্থিক সমস্যার কারণে এ সকল আয়রন এবং ভিটামিন এর চাহিদা পূরণ করতে পারেনা। তাই তাদের এই ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করার জন্য কচু জাতীয় যে কোন শাকসবজি এর উত্তম বিকল্প হতে পারে।

সাবধানতাঃ

যাদের এলার্জি আছে তারা কচু জাতীয় শাকসবজি না খাওয়াই ভালো।  পাশাপাশি কচুর মধ্যে অক্সালিক অ্যাসিড নামক এক ধরনের এসিড থাকার কারণে অনেকেরই এটি খাওয়ার পরে গলা চুলকাতে পারে। তাই এটি রান্না করার সময় খানিকটা লেবুর রস দিয়ে দিলে এই ধরনের সমস্যা দেখি আমরা মুক্ত থাকতে পারি।    

 

 

 

Leave a Comment