কচুর লতি আমাদের সমাজে খুবই কমন একটি সবজি। উপকারিতার কথা জেনে বা না জেনে কচুর লতি খায় না এমন মানুষ কিন্তু খুঁজে পাওয়া যাবে না। আজকে আপনাদের সাথে কচুর লতির যে উপকারিতার কথা গুলো শেয়ার করবো, এগুলো জানার পরে আপনারা অবশ্যই আপনাদের খাবারের তালিকায় কচুর লতি রাখতে আর ভূল করবেন না।
কচুর লতির গুনাগুনঃ
কচুর লতির মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি গুণ রয়েছে। যার মধ্যে আয়রন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম আরো প্রভৃতি উপাদান যেমন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কার্বোহাইড্রেট ও প্রচুর পরিমাণে ফাইবার।
কচুর লতির উপকারিতাঃ
আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরনের কচু দেখা যায় যার মধ্যে পানি কচু, কালো কচু, ওল কচু আরো অনেক ধরনের। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ২৭ হেক্টর জমিতে পানি কচু চাষ করা হচ্ছে। কচু এমন একটা উদ্ভিদ যার শিখড় থেকে পাতা পর্যন্ত প্রত্যেকটা অংশ আমরা বিভিন্নভাবে সবজি হিসেবে খেয়ে থাকি। তাই কচুর এবং কচুর লতির উপকারিতা কথা বলে শেষ করা যাবে না।
সব ধরনের ভিটামিন এ পরিপূর্ণ কচুর লতিঃ
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা তাদের বিভিন্ন প্রতিবেদনে কচু ও কচুর লতির বিভিন্ন উপকারিতার কথা তুলে ধরেছেন। যার মাধ্যমে আমরা জানতে পারি কচুর মধ্যে ভিটামিন এর সব ধরনের উপাদান রয়েছে।
শরীরের আয়রনের ঘাটতি পূরণ করতে কচুর লতির উপকারিতাঃ
শরীরে আয়রনের অভাবে যাদের হাড়ের জয়েন্টে জয়েন্টে ব্যথা থাকে বা সারা শরীর ব্যথা করে তারা আয়রনের অভাব পূরণ করার জন্য কচুর লতি খেতে পারেন। কারণ কচুর লতির মধ্যে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়রন। গর্ভাবস্থায় বা পিরিয়ড চলাকালীন অবস্থায় অথবা শিশুদের বাড়ন্ত বয়সে কচুর লতি প্রচুর পরিমাণে খাওয়া হলে শরীরে আয়রনের অভাব গুছিয়ে যায়।
আঁশ–জাতীয় খাবারের অভাব মোচনে কচুর লতির উপকারিতাঃ
শরীরে যখন আঁশ জাতীয় খাবারের অভাব হয়ে যায় বা ফাইবার এর অভাব হয় তখন আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা দেখা যায়। যেখান থেকে কোলন ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে। তাই এই সমস্যার সমাধান করার জন্য আমাদেরকে কচুর লতি বেশি বেশি করে খাওয়া দরকার হয়। কারণ কচুর লতি একটি আঁশজাতীয় খাবার। যেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার থাকে।
শরীরে ভিটামিন সি এর ঘাটতি পূরণ করতে কচুর লতির উপকারিতাঃ
শরীরে যখন ভিটামিন সি এর অভাব হয়ে যায়, তখন আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। এ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে আমাদের ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খাবারের প্রয়োজন পড়ে। সেই ক্ষেত্রে আমরা কচুর লতি আমাদের পছন্দের তালিকায় রাখতে পারি। কারণ কচুর লতির মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে।
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সমাধানে কচুর লতির ভূমিকাঃ
যাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা রয়েছে বা খাবার ভালোভাবে হজম হয় না, তারা কচুর লতি বেশি করে খেতে পারেন। কারণ কচুর লতি আমাদের খাবার ভালোভাবে হজম করতে সহায়তা করে থাকে।
সাবধানতা: কচুর লতি আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিনের অভাব মোচন করে। সেরকম কচুর লতির কিছু সাবধানতা অবলম্বন করা দরকার হয়। কারণ যাদের শরীরে এলার্জি জাতীয় সমস্যা রয়েছে তারা কচু জাতীয় সবজি থেকে দূরে থাকতে চেষ্টা করবেন। কারণ কচুর মধ্যে তাকা অক্সালিক অ্যাসিড আমাদের শরীরে চুলকানি বাড়িয়ে দিতে কাজ করে। এলার্জি জাতীয় সমস্যায় কচু জাতীয় সবজি না খাওয়াই ভালো।