জেনে নিন লইট্টা মাছের উপকারিতা ও গুণাগুণ

লইট্টা মাছের উপকারিতার কথা বলতে গেলে সর্বপ্রথমে বলতে হবে সামুদ্রিক মাছের কথা। সামুদ্রিক যত ধরনের মাছ আমরা খেয়ে থাকি সব ধরনের মাছের মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়োডিন থাকে। যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক বেশি উপকারী। কিন্তু সামুদ্রিক সব ধরনের মাছের মধ্যে লইট্টা মাছ আমাদের সবার কাছে খুবই প্রিয় একটি মাছ। কারণ বাজারে সহজলভ্যতা ও চাহিদার দিক দিয়ে এর জনপ্রিয়তা অনেক শীর্ষে। অল্প কাঁটাযুক্ত এই মাছ ছোট থেকে বড় সবার প্রিয়। আজ আপনাদের সাথে লইট্টা মাছের উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করব।

লইট্টা মাছের উপকারিতাঃ

দেখতে সাদা লালচে বা আরও বিভিন্ন রঙের লইট্টা মাছ বাজারে হরহামেশা দেখা যায়। লইট্টা মাছের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে আয়োডিন থাকে। ছোট,মাঝারি বা বড় আকারের লইট্টা মাছ পাওয়া যায়।

লইট্টা মাছ আমরা দুই ভাবে খেতে পারি। একটা হচ্ছে কাঁচা। যেটা সমুদ্র থেকে তুলে একেবারে তরতাজা খাওয়া হয়। আরেকটা হচ্ছে সমুদ্রের তীরে প্রচুর রোদের মধ্যে শুকিয়ে মাছকে একেবারে শুকনো করে খাওয়া যায়। আজকে আপনাদেরকে তাজা লইট্টা মাছ এবং শুকনো লইট্টা মাছের উপকারিতা সম্পর্কে জানাব।

তাজা লইট্টা মাছের উপকারিতাঃ

সমুদ্র থেকে তুলে আনা তাজা মাছের স্বাদই অন্যরকম। লইট্টা মাছ ফ্রাই করে, ভুনা করে বিভিন্ন উপায়ে আমরা আমাদের পছন্দ অনুযায়ী খেয়ে থাকি। তাজা লইট্টা মাছের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন রয়েছে। যেমন ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস,জিঙ্ক, প্রভৃতি উপাদান তাজা লইট্টা মাছের মধ্যে পাওয়া যায়।এছাড়াও লইট্টা মাছের কাটার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস থাকে যা আমাদের হাড়ের ক্যালসিয়াম তৈরি করতে যথেষ্ট পরিমাণে ভূমিকা রাখে। ছোট বাচ্চাদের আয়োডিনের অভাব পূরণ করতে প্রচুর পরিমাণে লইট্টা মাছ খাওয়া উচিত।

রক্তের হিমোগ্লোবিন বাড়াতে লইট্টা মাছের উপকারিতাঃ

রক্তের হিমোগ্লোবিন বাড়াতে তাজা লইট্টা মাছ অনেক বেশি ভূমিকা রাখে। কারণ লইট্টা মাছের মধ্যে থাকা ম্যাগনেসিয়াম, ওমেগা 3 ফ্যাটি এসিড, এন্টি অক্সিডেন্ট উপাদান রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়িয়ে রক্ত চলাচল নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাজ করে। তাই যাদের শরীরে রক্তের মধ্যে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে যায়, চিকিৎসকরা তাদেরকে বেশি করে লইট্টা মাছ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে।

শরীরের অলসতা, ক্লান্তি ভাব এবংস্মৃতিশক্তি হ্রাস হওয়া দূর করতে লইট্টা মাছের উপকারিতাঃ

তাজা লইট্টা মাছের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, লৌহ থাকার কারণে এটি আমাদের শরীরের অলসতা, ক্লান্তিভাব এবং স্থিতিশক্তি হ্রাস হওয়া থেকে দূরে রাখে।

থাইরয়েড জড়িত হরমোনের সমস্যা সমাধান করতে তাজা লইট্টা মাছের উপকারিতাঃ  

যাদের থাইরয়েড জনিত সমস্যা রয়েছে তারা অন্যান্য খাবারের পাশাপাশি অবশ্যই লইট্টা মাছ খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। তাজা লইট্টা মাছের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে আয়োডিন থাকার কারণে থাইরয়েড জনিত সমস্যা থেকে আমাদেরকে দূরে রাখে।

শুকনো লইট্টা মাছের উপকারিতাঃ 

উপকারিতার কথা বলতে গেলে তাজা লইট্টা মাছের চেয়ে শুকনো লইট্টা মাছের উপকারিতা বেশি। কারণ তাজা লইট্টা মাছ যখন প্রচন্ড রোদের তাপে শুকনো করা হয় তখন তার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি উৎপাদিত হয়, যা আমাদের শরীরের হাড়ের অস্টিওপরোসিস সমস্যা থেকে আমাদেরকে দূরে রাখতে কাজ করে। পাশাপাশি আমাদের শরীরে ক্যালসিয়াম, আয়রন এবং ম্যাগনেসিয়ামের অভাব পূরণ করে।

আমাদের শরীরে প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করতে শুকনো লইট্টা মাছের উপকারিতাঃ 

তাজা লইট্টা মাছের মধ্যে প্রোটিন থাকে। কিন্তু যখন আমরা তাজা লইট্টা মাছ কে রোদের তাপে শুকিয়ে ফেলি, তখন প্রোটিনের পরিমাণ আরো বেশি বেড়ে যায়। তাই তাজা লইট্টা মাছের তুলনায় শুকনো লইট্যা মাছ আমাদের শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি পূরণ করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।

সবশেষে বলা যায় লইট্টা মাছ তাজা হোক আর শুকনো হোক, দুই ভাবেই এটি আমাদের শরীরে অনেক ধরনের উপকার করে থাকে। তাই সময় এবং সুযোগ পেলেই আমরা লইট্টা মাছ খাবারের তালিকায় রাখতে যেন না ভুলি।

 

Leave a Comment