কুমড়ার বিচির আশ্চর্য ধরনের কিছু উপকার 

ছোট বেলায় অনেকসময় কুমড়ো রান্না করার পরে বিচিগুলো যখন ফেলে দিত তখন আমরা এগুলা শুকিয়ে মজা করে খেতাম। ভালো লাগত তাই খেতাম।

কিন্তু এর উপকারিতা আসলে কি সেটা জানতাম না। কিন্তু বর্তমান সময়ে বিভিন্ন প্রতিবেদনের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি কুমড়ার বিচির কিছু আশ্চর্য উপকারিতার কথা। যেগুলো আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি।

কুমড়ার বিচির উপকারিতাঃ

বাঙ্গালীদের মধ্যে কুমড়া চিনেনা, এরকম মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।  সবজি হিসেবে কুমড়া মানুষের খুব প্রিয় একটি খাবার। যদিও এ খাবার সিজনাল। শীতকালে বেশি পাওয়া যায়। কিন্তু এখন সারা বছর কুমড়া পাওয়া যায়।কাঁচা বা পাকা দুইভাবে কিন্তু কুমড়া সবজি হিসেবে খাওয়া যায়। কিন্তু কুমড়া ছাড়াও কুমড়ার বিচি ও যে আমাদের জন্য অনেক উপকার করে থাকে, তা হয়তো আপনারা আগে কখনো শোনেননি। তাই আজকে আমার প্রতিবেদনের বিষয় হলো কুমড়ার বিচি আমাদের শরীরে কিভাবে উপকার করে থাকে…

কুমড়ার বিচির মধ্যে থাকা গুরুত্বপূর্ণ উপাদান সমূহঃ

কুমড়ার বিচি আমাদের শরীরে অনেক উপকার করে থাকে। কারণ কুমড়ার বিচির মধ্যে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, লৌহ, ম্যাঙ্গানিজ, এন্টি অক্সিডেন্ট উপাদান সহ আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান সমূহ। শুধু স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে নয়, মিষ্টি কুমড়ার বিচি আমাদের ত্বকের জন্য অনেক বেশি উপকার সাধন করে থাকে।

হাড়ের কাঠিন্যতা বজায় রাখতে মিষ্টি কুমড়ার বিচির উপকারিতাঃ

অনেক সময় আমাদের মেরুদন্ডের হাড়ের মধ্যে অনেক জটিল জটিল কিছু সমস্যা দেখা যায়, যার মধ্যে অস্টিওআথ্রাইটিস, অস্টিওপোরোসিস, স্পন্ডালাইসিস এর মত সমস্যা। আমরা এই সমস্যা গুলোর জন্য অনেক কষ্ট পেয়ে থাকি। কিন্তু আপনি যদি খাবারের তালিকায় নিয়ম করে মিষ্টি কুমড়ার বিচি রাখেন, তাহলে এর মধ্যে থাকা ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, জিংক, এন্টি অক্সিডেন্ট উপাদান হাড় ক্ষয় রোধ করতে কাজ করে এবং হাড়ের কাঠামো বজায় রাখে।

মিষ্টি কুমড়ার বিচি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ

মিষ্টি কুমড়ার বিচির মধ্যে প্রচুর পরিমাণে জিংক এবং ম্যাগনেসিয়াম থাকার কারণে এটি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কাজ করে। তাই যাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তারা নিয়মিত খাবারের তালিকায় মিষ্টি কুমড়ার বিচি রাখতে পারেন।

মিষ্টি কুমড়ার বিচি আমাদের শরীরে হরমোনের মাত্রা কে নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাজ করেঃ

মিষ্টি কুমড়ার বিচির মধ্যে ট্রিপটোফ্যান নামক এক ধরনের অ্যামাইনো এসিড থাকে যা আমাদের শরীরে সুখানুভূতির একটি হরমোন উৎপাদন করতে সক্রিয় ভাবে ভূমিকা রাখে। পাশাপাশি আরও অনেক ধরনের হরমোনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাজ করে।

চুলের যত্নে ত্বকের যত্নে মিষ্টি কুমড়ার বিচির উপকারিতাঃ

মিষ্টি কুমড়ার বিচির মধ্যে থাকা ওমেগা 3 ফ্যাটি এসিড, এন্টি অক্সিডেন্ট উপাদান, জিংক সালফাইট থাকার কারণে এটি আমাদের চুলকে ঘন ও উজ্জ্বল করতে সহযোগিতা করেন। এবং মিষ্টি কুমড়ার বিচির মধ্যে আরেকটি এসিড যার নাম এসেন্সিয়াল ফ্যাটি এসিড যা আমাদের ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখতে কাজ করে।

এছাড়াও মিষ্টি কুমড়ার বিচি আরো অনেক ধরনের সমস্যার সমাধান করে থাকে।

> যে সকল পুরুষদের প্রোস্টেট গ্ল্যান্ড এর প্রবলেম হয়ে থাকে, তারা যদি মিষ্টি কুমড়ার বিচি ব্লেন্ডার করে খেতে পারে, তাহলে প্রোস্টেট গ্ল্যান্ডের সমস্যা থেকে দ্রুত উপকার পেতে পারে।

> মিষ্টি কুমড়ার বিচি তে থাকা অধিক পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম এবং ক্যালসিয়াম পাশাপাশি এন্টি অক্সিডেন্ট উপাদান শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে কার্যকর ভূমিকা রাখে।

তাই বন্ধুরা সবশেষে বলতে পারি, মিষ্টি কুমড়ার বিচি ফেলে না দিয়ে মিষ্টি কুমড়ার বিচির উপকারিতা গুলো ভালোভাবে পড়ে আপনারা সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হওয়ার চেষ্টা করুন।      

 

 

 

 

 

Leave a Comment