পৃথিবীতে বহু প্রজাতির ক্ষিরা রয়েছে। আমাদের দেশে বর্তমানে অনেক ধরনের ক্ষিরার উৎপাদন হতে দেখা যায়। যদিও বা আগে ক্ষিরা মৌসুমী ফল হিসেবে বিবেচনা করা হলেও এখন সারাবছর ক্ষিরার প্রাধান্যতা লক্ষ্য করা যায়।
সুলভ মূল্যে পাওয়া যায় বলে বাজারে ক্ষিরার চাহিদা অনেক বেশি। বর্তমানে ক্ষিরা শুধুমাত্র সালাদ হিসাবে না খেয়ে মানুষ ক্ষিরা আরও বিভিন্ন উপায়ে ব্যবহার করে থাকে। তাই আজ আপনাদের সাথে ক্ষিরার বিভিন্ন ধরনের উপকারিতার কথা জানাবো।
দৈনন্দিন জীবনে ক্ষিরার উপকারিতাঃ
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ক্ষিরা আমরা সবজি হিসেবে খেয়ে থাকি। কিন্তু সবজি হিসেবে খাওয়া ছাড়াও ক্ষিরা শরীরের বিভিন্ন ধরনের উপকার করে থাকে।
ক্ষিরা্র রয়েছে অসংখ্য ভেষজ গুণ। বিশেষ করে শরীরের মেদ ঝরাতে, পরিপাকতন্ত্রের সমস্যা সমাধান করতে, শরীরে পানির ঘাটতি পূরণ করতে, এছাড়াও ত্বকের বিভিন্ন যত্নে ক্ষিরার ব্যবহার অতুলনীয়।
শরীরের পানিশূন্যতা রোধ করতে ক্ষিরার উপকারিতাঃ
প্রতি ১০০ গ্রাম ক্ষিরার মধ্যে ৯৪.৬ গ্রাম পানি থাকে যা আমাদের শরীরের পানিশূন্যতা রোধ করতে অনেক বেশি ভূমিকা রাখে। এছাড়া ক্ষিরার মধ্যে থাকা ফ্লুইড উপাদান আমাদের শরীরে পানিশূন্যতা ঘাটতি পূরণ করতে কাজ করে।
শরীরের উচ্চ রক্তচাপ কমাতে ক্ষিরার উপকারিতাঃ
ক্ষিরার মধ্যে থাকা বিভিন্ন ধরনের ফাইবার ও প্রোটিনসমৃদ্ধ উপাদান আমাদের শরীরের ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখে। এছাড়া ক্ষিরার মধ্যে থাকা সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম প্রভৃতি আমাদের রক্তের মধ্যে গিয়ে অতিরিক্ত পরিমাণে ফ্যাট ঝরিয়ে ফেলে শরীরে রক্ত চলাচল সচল রাখে।
কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা সমাধান করতে ক্ষিরার উপকারিতাঃ
ক্ষিরার মধ্যে থাকা এরেপকসিন নামক উপাদান আমাদের শরীরে পাকস্থলীর সমস্যা সমাধান করে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো জটিল সমস্যা থেকে আমাদেরকে দূরে রাখার কাজ করে থাকে। তাই যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা আছে তারা নিয়মিত খাবারের তালিকায় ক্ষিরা রাখতে পারেন।
আর্থ্রাইটিসের সমস্যা সমাধানে ক্ষিরার ভূমিকাঃ
যাদের শরীরে আথ্রাইটিসের সমস্যা রয়েছে এবং সারা শরীরে যাদের ব্যাথা করে, তারা নিয়মিতভাবে ক্ষিরার রস সেবন করতে পারেন। কারণ ক্ষিরার মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফ্ল্যাভানয়েড উপাদান আমাদের শরীরের ইউরিক এসিডের পরিমাণ কমিয়ে শরীরের আথ্রাইটিস এর সমস্যা সমাধানে কাজ করে।
এছাড়া ক্ষিরার রস আমাদের শরীরের কিডনি সমস্যা, পাকস্থলী প্রক্রিয়াজাতকরণ, পাশাপাশি পিত্তথলিতে পাথর হওয়া থেকেও অনেকাংশে আমাদেরকে দূরে রাখার কাজ করে থাকে।
তাই ক্ষিরা শুধুমাত্র সালাত হিসাবে ব্যবহার না করে ক্ষিরা আমাদের দৈনন্দিন খাবারের তালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে রেখে উপরোক্ত সমস্যাগুলো থেকে আমরা দূরে থাকার চেষ্টা করব।
সতর্কতাঃ অনেকে ওজনের সমস্যা সমাধান করার জন্য প্রচুর পরিমাণে ক্ষিরা খেয়ে থাকেন। কিন্তু এই ক্ষেত্রে অতিরিক্ত পরিমাণ ক্ষিরা খাওয়া আমাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে।
তাই এমনভাবে ক্ষিরা আমাদের খাবারের তালিকায় রাখা উচিত যাতে আমাদের উপকার করে। অপকার নয়।